আইনকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে নিষিদ্ধ প্লাস্টিকের বস্তায় চাল বাজারজাত
স্টাফ রিপোর্টার
আপলোড সময় :
১২-০১-২০২৫ ০১:৫৭:৪৪ অপরাহ্ন
আপডেট সময় :
১২-০১-২০২৫ ০১:৫৭:৪৪ অপরাহ্ন
সংবাদচিত্র : ফোকাস বাংলা নিউজ
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আশুগঞ্জে চাল উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানের মালিকরা আইনকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে পাটের পরিবর্তে নিষিদ্ধ প্লাস্টিকের বস্তায় চাল বাজারজাত করছেন। প্রশাসনের নাকের ডগায় বছরের পর বছর এমন ঘটনা ঘটলেও দেখার যেন কেউ নেই। তবে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের দাবি, প্লাস্টিকের বস্তার ব্যবহার রোধে প্রায়ই অভিযান পরিচালনা করা হয়। তবে মিল মালিকরা জানান, পাটের বস্তা সহজলভ্য না হওয়ায় বাধ্য হয়ে তারা প্লাস্টিকের বস্তায় চাল বাজারজাত করছেন।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আশুগঞ্জ উপজেলায় প্রায় দুই শতাধিক রাইসমিল রয়েছে। এর মধ্যে ৪৩টি অটোমেট্রিক রাইস মিল, ২৭৫টি অটো রাইসমিল। এসব রাইস মিলে উৎপাদিত চাল প্লাস্টিকের বস্তায় মোড়কীকরণ করে বাজারজাত করা হচ্ছে।
জানা যায়, ২০১৪ সালের জানুয়ারি থেকে ধান ও চাল বিপণনে পাটের বস্তা ব্যবহার বাধ্যতামূলক করে বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়। মন্ত্রণালয়ের পক্ষে কড়া নির্দেশনা দেওয়া হয় এ দুটি পণ্যে কোনো প্লাস্টিকের ব্যাগ ব্যবহার না করার। এরও চার বছর আগে ২০১০ সালে ৭ অক্টোবর ‘পণ্যে পাটজাত মোড়কের বাধ্যতামূলক আইন-২০১০’ করে বস্ত্র ও পাটমন্ত্রণালয়। আইন প্রণয়নের পর দীর্ঘ সময় অতিবাহিতহলেও এর কার্যত কোনো প্রয়োগই নেই ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আশুগঞ্জে।
সরেজমিনে দেখা যায়, উপজেলার বেশিরভাগ রাইসমিলেই চালের মোড়কীকরণে প্লাস্টিকের বস্তার ব্যবহার হচ্ছে। হাতেগোনা দুই-তিনটি মিলে কিছু পাটের বস্তায় চাল বাজারজাত করতে দেখা গেলেও বাকি মিলগুলোতে দেদারছে চলছে প্লাস্টিকের বস্তার ব্যবহার। যদিও এ বিষয়ে সরাসরি কথা বলতে নারাজ মিল মালিকরা।
হাইটেক এগ্রো ফুডের প্রোপাইটর আলকাছ মিয়া জানান, আমরা যথাসাধ্য চেষ্টাকরি প্লাস্টিকের পরিবর্তে পাটের বস্তা ব্যবহার করতে কিন্তু আমরা চাহিদা অনুযায়ী পাটের বস্তা পাই না। তাছাড়া চাল মোড়কীকরণে পাটের বস্তা ব্যবহার করলে চালের দাম কেজিপ্রতি বেড়ে যাবে প্রায় ৮০ থেকে ৯০ পয়সা। কারণ পাটের বস্তা ব্যবহার করতে গেলে ৫০ কেজির বস্তায় অতিরিক্ত ৩০-৪০ টাকা গুনতে হয়।
ফাইভ স্টার অটোমেট্রিক রাইসমিলের সত্ত্বাধিকারী উজ্জ্বল মুন্সী জানান, আমরা প্রশাসনকে ম্যানেজ করেই প্লাস্টিকের বস্তা ব্যবহার করি। আমি একা করি না, সব মিল মালিকরাই করে।
আল মদিনা এগ্রোফুডের পরিচালক আজিজুল হক জানান, পাটের বস্তার পরিবর্তে কেন প্লাস্টিকের বস্তা ব্যবহার করি তা আমি বলতে পারব না। মালিক সমিতি ভালো বলতে পারে।
আশুগঞ্জ উপজেলা অটো মেজর এন্ড হাসকিং মিল মালিক সমিতির সাবেক সভাপতি জোবায়ের হায়দার বুলু জানান, পাঠের বস্তার সহজলভ্যতা কম। তাই বাধ্য হয়ে মিল মালিকরা প্লাস্টিকের বস্তা ব্যবহার করেন। তাছাড়া চাল মোড়কীকরণে পাটের বস্তা ব্যবহার করলে চালের দাম কেজিপ্রতি বেড়ে যাবে প্রায় ১ থেকে দেড় টাকা । কারণ পাটের বস্তা ব্যবহার করতে গেলে ৫০ কেজির বস্তায় অতিরিক্ত ৬০-৭০ টাকা বেশি গুনতে হয়। তবে সরকার স্বল্পমূল্যে সরবরাহ করলে রাইস মিলমালিকরা পাটের বস্তা ব্যবহারে উৎসাহী হবেন বলেও মনে করেন তিনি।
আশুগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শ্যামল চন্দ্র বসাক জানান, রাইস মিলগুলো প্লাস্টিকের বস্তা ব্যবহার বন্ধে মাঝেমধ্যে অভিযান চালানো হয়। অভিযান পরিচালনা করেও আশানুরূপ ফল পাওয়া যাচ্ছে না।
বাংলা স্কুপ/ লোকমান হোসেন/প্রতিনিধি/এসকে
প্রিন্ট করুন
কমেন্ট বক্স